একুশে ডেস্ক :
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ বাড়ছে, এর বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের হার কমছে। সম্পদ থেকে আয় কমে যাচ্ছে। ঋণ আদায় হ্রাস পাচ্ছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর নিট আয় কমে যাচ্ছে। ফলে রিজার্ভ তহবিল বা মূলধনের জোগান বাড়াতে পারছে না। এতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন রাখার হারও কমছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা সবল হতে পারছে না। ক্রমেই দুর্বলতার দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোর ঋণ আদায় কমে যাচ্ছে। এর বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। আড়াই বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৭ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বা ৭৬ শতাংশ। খেলাপি ঋণ বাড়লে এর বিপরীতে নির্ধারিত হারে প্রভিশন রাখতে হয়। নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ। খেলাপি হওয়ার আগের ধাপে অর্থাৎ বিশেষ হিসাবে স্থানান্তর হলে ৫ শতাংশ, খেলাপি হওয়ার পর নিুমান হলে ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে ৫০ শতাংশ ও মন্দ হিসাবে শ্রেণিকৃত হলে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হয়। এ কারণে খেলাপি ঋণ বাড়লে প্রভিশনও রাখতে হয় বেশি। খেলাপির মধ্যে ৮৮ শতাংশই আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণ। অর্থাৎ মন্দ ঋণ যত প্রভিশন রাখতে হয় তত। এতে ব্যাংকগুলোর মুনাফা থেকে অর্জিত অর্থ আটকে যাচ্ছে। এগুলো রিজার্ভ তহবিল বা মূলধনে স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। আবার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসাবেও দেওয়া যাচ্ছে না। খেলাপি ঋণ যেভাবে বাড়ছে সেভাবে আয় থেকে প্রভিশন করা যাচ্ছে না। ফলে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন সংরক্ষণের হার কমছে। এতে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে।